যারা চাকরির পরীক্ষায় সফল হবার প্রতীক্ষায় শুধু তাদের জন্য:
আমি আমার ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই mediocre ছিলাম। যতদূর মনে পড়ে আমি মাত্র একবার ফার্স্ট হয়েছিলাম তৃতীয় শ্রেনির ফাইনাল পরীক্ষায় তাও আবার নিয়মিত ১ম হয়ে আসা মেয়েটির অসুস্থতার কারনে। SSC তে জিপিএ ৪.৭৫ আর HSC তে মাত্র ৪.৩০! খুব ইচ্ছা ছিলো Armyতে কমিশন্ড অফিসার হবো। HSC এর পর ১মবার পরীক্ষা দিয়ে ৪দিন ISSB তে থেকে খালি হাতেই ফিরতে হল। সাথে আর্মি অফিসার হবার স্বপ্ন ISSB বোর্ডে রেখেই ফিরে এলাম। ও পথে আর কখনো পা বাড়াইনি। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যানে অনার্স ও মাস্টার্সে তেমন পড়ালেখা না করলেও চেষ্টা ছিলো রেসাল্ট যেন at least 1st class থাকে।![]() |
| Interview-Tips-for-Skilled-banglatoday |
অনার্সে টেনেটুনে ৩.০৬ আর মাস্টার্সে বরাবর ৩.০০! আমার টার্গেট ছিলো খুব ভালো রেসাল্টের দরকার নেই বরং সব চাকরিতে apply করার মতো রেসাল্ট মানে 1st class থাকলেই হলো! কারন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে university টিচার হতে না চাইলে record result করে তেমন লাভ নেই। সেটাই ছিলো আমার মাথায়। আমি সর্বদা টার্গেট নিয়ে এগিয়েছি। কাজ করেছি সবার অলক্ষ্যে...নিরবে আর অনেকটাই নিভৃতে। সবাই যখন অনার্স মাস্টার্সে কিছু একটা করে দেখানোয় ব্যস্ত তখন আমি শুরু করলাম চাকরির প্রিপারেশান।
অনার্স পরীক্ষা শেষ করেই শুরু করলাম একটানা ৬মাসের Bank+BCS এর কম্বাইন্ড প্রিপারেশান। Math আর English প্রিপারেশান নিতাম Bank. এর জন্য আর বাকি সাবজেক্টগুলোর প্রিপারেশান নিতাম বিসিএস'এর জন্য। এসময় আমি কোনও আড্ডা দিতাম না বললেই চলে। শুধু ব্যস্ত থাকতাম প্রিপারেশান আর ৪/৫ টা টিউশনি নিয়ে। প্রতিদিন আমার ছিলো routined life. সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে routine অনুযায়ী ৩/৪টা সাবজেক্ট ১টা পর্যন্ত পড়তাম। বিকাল থেকে একটানা টিউশনি করে রাত ৯/৯.৩০ টায় বাসায় ফিরতাম। এরপর পড়তে বসতাম আর রাত ১/১.৩০ টা পর্যন্ত সেটা চলতো।
আমার মনে সবসময় confidence কাজ করতো। ভাবতাম অন্য কেউ পারুক বা না পারুক কিন্তু আমি পারবো। আমাকে পারতেই হবে। প্রিপারেশান শুরুর ৪মাস পর ৩৩ তম BCS প্রিলি পরীক্ষা। এসময় বিভিন্ন ক্যাডার'দের ফলো করতাম। বিভিন্ন কোচিং এ ফ্রি সেমিনারে অংশ নিয়ে ক্যাডার'দের কথাগুলো মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনতাম আর ভাবতাম আমাকেও তাদের মতো হতে হবে। আমার সব বই খাতায় লেখা থাকতো "YES, I CAN". আমার কনফিডেন্স কাজে দিলো। আমাদের Dept. থেকে আমরা মাত্র ২জন ৩৩তম প্রিলি উত্তীর্ন হলাম। কনফিডেন্স আরো বেড়ে গেলো। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক পদে ভাইবা দিলাম। তখন ভাবলাম বর্তমান চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে আমি সেরা ১০০০জনের মধ্যে আছি।
আমাকে সেরা ১০০ তে ঢুকতে হবে। এখন মনে হয় আমি পেরেছি! আমি ২০১৪ সালের মার্চে MS result পাবলিশের পর ৬টা ভাইবা দিয়ে এপর্যন্ত ৪টা চাকরি পেয়েছি। EXIM BANK এ Trainee Officer, First Security Islami Bankএ Probationary Officer, ৩৩তম BCS থেকে ১ম শ্রেনির গেজেটেড নন-ক্যাডারে Bangladesh Parliament Secretariat এ সহকারী সচিব সমমর্যাদার 'কমিটি অফিসার' এবং সর্বশেষ ৩৪তম BCSএ পুলিশ ক্যাডার(১৫ তম)!
এসব বলার কারন নিজেকে জাহির করা নয় বরং আমি বিশ্বাস করি আমি সাধারন মানের একজন ছাত্র হয়ে যেহেতু পেরেছি, আপনারাও পারবেন। মনে রাখবেন চাকরির পরীক্ষা শুধু মুখস্ত পড়াশোনা দিয়ে উত্তীর্ন হওয়া যায় না। এর জন্য কিছু ট্রিকস আর টেকনিক ফলো করতে হয়।
সর্বদা confident থাকুন। কারন confidence is the key to success. নিজেকে আপডেটেড রাখুন। আড্ডার নেশা ত্যাগ করুন। ভাবতে শিখুন যে আপনি পারবেন। স্বপ্ন দেখুন আর সেটার ডালপালা বেড়ে ওঠার সুযোগ দিন। সাফল্য আজ হোক বা কাল হোক...আসবেই!! Best of luck...
মোঃ মহিতুল ইসলাম রিয়াজ
কমিটি অফিসার, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় এবং
৩৪তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার সুপারিশপ্রাপ্ত (১৫তম).

No comments:
Post a Comment