নির্বাচন এক ইউনিয়নে ভোট পড়েছে শতকরা ২০০ ভাগ !

ভোটার ৩ হাজার ১২৮। ভোট পড়েছে ৬ হাজার ১৩৫টি। যা মোট ভোটারের ১৯৬ ভাগ। এমন অবিশ্বাস্য ভোট পড়েছে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার বেলছড়ি ইউনিয়নে। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে ভোটের এই হারের তথ্য দেয়া হয়েছে। যদিও রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইসি সচিব বলছেন, এটি অবিশ্বাস্য। আসলে ঘটনা কি ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তৃতীয় ধাপে গত ২৩শে এপ্রিল এই ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় অস্বাভাবিক এ ভোটের হারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, এটা কিভাবে হলো, আমারও বিশ্বাস হচ্ছে না। বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। তাছাড়া, কোনো ইউনিয়নে দ্বিগুণ ব্যালট পেপার যাওয়ার তো কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসার শাহ আলম মানবজমিনকে বলেন, ওই ইউনিয়নে কতজন ভোটার আছে তা এই মুহূর্তে আমার মনে নেই। কত ভাগ ভোট পড়েছে সেটাও সঠিকভাবে বলতে পারছি না। দেখে বলতে হবে। ১৯৬ ভাগ ভোট পড়ার খবর সত্য কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা হতে পারে না। এদিকে শুধু বেলছড়ি ইউনিয়নই নয়, আরেকটি ইউনিয়নে পড়েছে শতভাগের ওপরে ভোট। নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার চন্দননগর ইউপির ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ৩১০। এই ইউনিয়নে মোট ভোট পড়েছে ২০ হাজার ৬৯৪টি। যা মোট ভোটারের ১০৭ ভাগ। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ৬১৪টি ইউপির মধ্যে ৭টিতে ভোট পড়েছে ৯০ ভাগ থেকে ১০০ ভাগের ভেতরে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার গোমতী ইউনিয়নে ভোট পড়েছে ৯৮ দশমিক ৫৭ ভাগ। এই ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৬ হাজার ৫৬৮। ভোট পড়েছে ৬ হাজার ৩৭৬। চাঁপাই নবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নে ৯০ ভাগ এবং নীলফামারী ডিমলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নে ৯২ ভাগ ভোট পড়েছে। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নে ভোট পড়েছে ৯৩ ভাগ। এছাড়া রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ও সরনজাই- এই দুটি ইউনিয়নেই ভোট পড়েছে ৯০ ভাগ। একই উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নে ভোট পড়েছে ৯১ ভাগ। নির্বাচন কমিশনের হিসাবে বলছে, তৃতীয় ধাপে ৮৫ ভাগ থেকে ৯০ ভাগের মধ্যে ভোট পড়েছে ৯৬টি ইউনিয়নে। ৮০ থেকে ৮৫ ভাগের মধ্যে ভোট পড়েছে ১৭৫টি ইউনিয়নে। এই ধাপের চূড়ান্ত ফলাফল অনুযায়ী, ৬১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মোট ৩৯৫টি ইউনিয়নে জিতেছে। এরমধ্যে ৩৬৬টি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ও ২৯ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। বিএনপি জিতেছে ৬০টি ইউপিতে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছে ১৩৯টি ইউনিয়নে। জাতীয় পার্টি ১৪টি, জাসদ ১টি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ১টি ইউনিয়নে জয় পেয়েছে।